Sunday, May 19, 2024
spot_img

কলকাতার কাছেই আরেক তারাপীঠ

কুনাল মালিক

বাটানগর: কলকাতার খুব কাছেই অবিকল গড়ে উঠেছে আর এক তারাপীঠ।

মন্দির এবং মায়ের বিগ্রহ দেখলে মনে হবে যেন বীরভূমের তারাপীঠে দাঁড়িয়ে আছি। গত ১৪ জানুয়ারি এই তারাপীঠ মন্দিরের উদ্বোধন হয়। মহেশতলা পৌরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের উদয়ন পল্লীতে এই তারাপীঠ গড়ে উঠেছে। কয়েকজন উৎসাহী যুবক প্রথমে ভেবেছিল এখানে বড় শিব কালী কিংবা বড় ঠাকুরের মন্দির হবে। পরে তারা সিদ্ধান্ত নেয় না এখানে তারা মায়েরই মন্দির হবে। কারণ অনেক মানুষকে বীরভূমের তারাপীঠে গিয়ে মাকে পুজো দিতে হয়। লাইনে দাঁড়ানোর জন্য গুনতে হয় আরো স্পেশাল টাকা। মোটকথা তারাপীঠে যেতে গেলে অনেক রকম সমস্যার ব্যাপার থাকে। তাই যথারীতি তন্ত্রমতে নিয়ম-কানুন মেনে এই তারাপীঠ এবং তারা মায়ের বিগ্রহের উদ্বোধন হয়। মন্দির নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা।। মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজ এবং গর্ভগৃহে ঢোকার যে দরজা আছে তা অবিকল বীরভূমের তারাপীঠের মন্দিরের মতো। মন্দিরের ভিতরে বিগ্রহের পিছনের যে কারু কাজ তাও তারাপীঠের মন্দিরকে স্মরণ করিয়ে দেয়। মন্দিরটি নির্মাণ করেছেন শেখ আজহারউদ্দিন এবং তার ভাই সেলিম শেখ। মন্দির নির্মাণে সহযোগিতা করেছেন গাইড হিসেবে সৌমিক গুপ্ত। তারা মায়ের বিগ্রহটি নির্মাণ

করেছেন কুমারটুলির শিল্পী অসীম পাল। মায়ের বিগ্রহের নিচে আছে শীলা মূর্তিও। তবে এখানে শিলা মূর্তিটি বামদেব যেভাবে মা তারাকে দেখেছিলেন সেই রূপে নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে শিলা মূর্তিটির রূপ নীল সরস্বতীর উগ্রতারা। পূজারী সাধক এবং তন্ত্র বিশারদ রাহুল মাইতি এই শিলামূর্তি নির্মাণ করেছেন। অনেক চিন্তা ভাবনা করে। কথায় বলে গঙ্গার উপকূল বারাণসীর সমতুল। অধিকাংশ শক্তিপীঠ বা সিদ্ধ পিঠ নদীর পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। নদীর পূর্ব উপকূলে অবস্থিত বাটানগরের তারাপীঠ মন্দির। মন্দির কমিটির প্রধান উদ্যোক্তারা হলেন রাজু চক্রবর্তী, তাপস রাহা, সৌমিক গুপ্ত, উদয় ভদ্র, বিপ্লব দত্ত, বিশ্বজিৎ দত্ত, সুশীল গায়েন শঙ্কর নস্কর দিলীপ দত্ত, প্রমোতোষ মণ্ডল এবং পিনাক দাশগুপ্ত। তারা জানালেন এখানে যে তারা মা প্রতিষ্ঠা আছেন তার নাম মা কল্যানেশ্বরী এবং শিব চন্দ্রচূড় ভৈরব। সকাল সাড়ে ৫টায় শিলামূর্তির স্নান করানো হয়। তারপর মায়ের প্রাতঃরাশ ও মঙ্গল আরতি এবং পুজো দেওয়া শুরু হয়। দুপুর একটার সময় মাকে ভোগ প্রদান করা হয়। একটা তিরিস মিনিটে মন্দিরের দরজা বন্ধ করা হয়। সাড়ে চারটের সময় আবার খোলা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছটার সময় সন্ধ্যা আরতি এবং শীতল ভোগ দেওয়া হয় মাকে এবং সেই ভোগ ভক্তদের মধ্যে বিতরণও করা হয়। সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে শীলা মূর্তি দর্শন করানো হয়। রাত নটার সময় মন্দিরে দরোজা আবার বন্ধ হয়ে যায়। উদ্যোক্তারা জানালেন ইতিমধ্যে হাওড়া হুগলি সুন্দরবন ফলতা ডায়মন্ডহারবার ও কলকাতা থেকে ভক্ত জন এখানে আসতে শুরু করেছে। অনেকেই শান্ত পরিবেশে নিজের হাতে পুজো দিতে পেরে অত্যন্ত আপ্লুত। কলকাতা থেকে আসতে হলে দক্ষিণ শাখার শিয়ালদহ বজবজ ট্রেন ধরে নুঙ্গি স্টেশনে নামতে হবে। তারপর টোটো কিংবা অটো করে পৌঁছে যাওয়া যাবে বাটানগর এর উদয়ন পল্লীর তারাপীঠ মন্দিরে। সড়কপথে এলে তারাতলা থেকে সম্প্রীতি ব্রিজ ধরে বাটানগর মোড়ে আসতে হবে। ওখান থেকে টোটো বা অটো করে এই মন্দিরে আসতে পারেন।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

1,231FansLike
10FollowersFollow
4SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles